গল্পের শিরোনাম
recent

ভালোবাসা অগোচরে

“চলতে চলতে আজ দাড়িয়েছি আমি পথের এ কোন প্রান্তে?
জানিনা,এই পথ আমায় নিয়ে চলেছে কোথায় নিজের অজান্তে…“
কলিংবেলের শব্দে চিন্তায় ছেদ পড়ল । লামিয়ার ডায়েরীটা যথাস্থানে রেখে উঠে দাড়ালো ।
রুম থেকে বের হবার আগে হঠাৎ করেই একবার পেছনে ফিরে তাকালো,লামিয়ার দৃষ্টি চলে গেল রেখে আসা ডায়েরীর দিকে।একটা সময় ছিল,ওর একাকীত্বের জীবনে প্রতিদিন যেকোন একটা সময় ডায়েরী লেখা চাই ই চাই লামিয়ার,তা না হলে কোন কিছুতে শান্তি পেত না যে্ন,আর এখন…?হাজারো কাজের ভীড়ে সময় কই?তারপরেও সুযোগ পেলেই বসে যায়।
দরজা খুলে দেখল বুয়া এসেছে,বুয়াকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে আবারো টেবিলে এসে বসল,
কিন্তু বসা মাত্রই মোবাইলে রিং আবার বেজে উঠল,হাতে নিয়ে দেখল অপরিচিত নাম্বার।
কে হতে পারে?কে হতে পারে?চিন্তা করতে করতে রিং অফ হয়ে গেল।কি আর করা…
মোবাইলটা বেডে রেখে আসতে নিবে আবারো বেজে উঠল,হাতে নিয়ে দেখল সেই অপরিচিত নাম্বার,অপরিচিত নাম্বারে ফোন আসাটা নতুন কিছু না,তবে এই অপরিচিত নাম্বারটা কেন জানি পরিচিত মনে হচ্ছে লামিয়ার,শেষের তিনটা ডিজিট খুব চেনা মনে হচ্ছে কিন্তু চিনতে পারছে না।ভাবতে ভাবতে ইয়েস বাটনে ক্লিক করে কানে লাগালো,সালাম দিল । কিন্তু ওপাশ থেকে কোন সাড়া নেই,আরো অবাক হলো লামিয়া…!কিছুক্ষন সে নিজেও চুপ করে রইল,নাহ কোন সাড়া নেই,কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনই শুনতে পেল,
– কেমন আছো লতা?তোমার কন্ঠটা একদমই বদলায়নি…।
লামিয়ার মনে হলো সারাটা দুনিয়া মনে হয় কাঁপছে!এ কার কন্ঠ শুনছে সে?আজ এত বছর পর…কেমন করে সম্ভব এটা!যে লতাকে সে একেবারে কবর দিয়ে চলে এসেছে আজ এত বছর পর সেই লতা ডাক…!কোন কথা বলতে পারল না লামিয়া,কোন রকমে বিছানায় বসল।আবারো শুনতে পেল,
– খুব অবাক হয়েছ তাই না?অবাক হওয়ারই কথা,দশ বছর পর কন্ঠ শুনছ আমার। দশ বছর অনেক সময়…
দেয়ালে হেলান দিয়ে বসল লামিয়া,নাহ,এত ইমোশনাল হবার কোন দরকার নেই।
খুব স্বাভাবিক ভাবে বলার চেষ্টা করল,
– হুম,ঠিক বলেছেন,দশ বছর অনেক সময় । দুই বছরের স্মৃতি একেবারে ভুলে যাওয়ার জন্য দশ বছর কম সময় না । তা কি মনে করে ফোন করলেন এতদিন পর?
সাথে সাথে কোন উত্তর আসলনা ওপাশ থেকে,ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলল লামিয়া । আগের মতোই আছে মানুষটা । কথার পিঠে কথা বলতে পারেনা এখনো…
– আসলে,তোমার কাছে একটা চিঠি পৌছাতে চাচ্ছিলাম,কিন্তু তোমার বর্তমান ঠিকানা জানিনা,ভেবেছিলাম তোমার চাচার বাসায় অথবা বড় ভাইয়ের বাসায় দিলে তুমি পাবে,কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানলাম তুমি এখনো তাদের সাথে কোন যোগাযোগ রাখোনা।তাই অনেক কষ্টে তোমার ফোন নাম্বার যোগাড় করলাম।‘
বেশ অবাক হলো লামিয়া,এত বছর পর হঠাৎ ওকে চিঠি লেখার কি প্রয়োজন পড়ল মানুষটার !
– কিসের চিঠি?কে লিখেছে?
– আমিই লিখেছি আর কি জন্য লিখেছি তা পড়লেই বুঝতে পারবে।
লামিয়া কি উত্তর দিবে ভেবে পায় না।চিঠিটা কিসের জন্য লেখা তা বুঝতে পারছে না,এত বছর পর তার কাছ থেকে চিঠি নেয়া কি ঠিক হবে?
এমন সময় আবারো কলিংবেল বেজে উঠল,ঘড়ির দিকে তাকালো লামিয়া,বাচ্চাদের আসার সময় হয়ে গেছে।আর কিছু না ভেবে,ওর এক পুরোনো কলিগের ঠিকানা দিয়ে দ্রুত ফোন রেখে দিল।সব কিছু কেমন যেন অদ্ভুত লাগছে…!
এরপর কেটে গেছে কয়েকদিন,সংসারের হাজারো কাজের ভীড়ে লামিয়া মোটামোটি ভুলেই গিয়েছিল,সেই চিঠির কথা।বাচ্চাদের জন্য সন্ধ্যার নাস্তা রেডী করছিল,এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠল।এদিক ওদিক তাকালো লামিয়া কিন্তু দুই সন্তানের কাউকেই দেখতে পেলনা,অগ্যাত ময়দা মাখানো হাতেই দরজা খুলে দিল,কিছুটা অবাক হলো পুরনো কলিগ তন্নীকে দেখে…
– কি ব্যাপার তন্নী?!এতদিন পর হঠাৎ কি মনে করে?পথ ভুলে নাকি ভাই…
– হুম,পথ ভুলে আমি আসিনা বুঝলা,পথ ভুলে তোমার চিঠি আসে আমার কাছে…হাহাহা
– আমার চিঠি?কোথা থেকে?
বলেই মনে পড়ে গেল,সেদিন তন্নীর ঠিকানাটাই দিয়েছিল লামিয়া।আর কথা না বাড়িয়ে তন্নীকে বসতে দিল । বলল,
– আচ্ছা ওসব কথা পরে হবে এখন একটু বস,নাস্তা বানাচ্ছি,খেতে খেতে গল্প করা যাবে ওকে?প্লিজ একটু বসো।
তন্নী ও আর কথা না বাড়িয়ে বসল।প্রায় মিনিট বিশেক পর তন্নীকে নিয়ে যেয়ে নিজের রুমে বসল লামিয়া।কথায় কথায় তন্নী সেই চিঠির প্রসংগ আবার তুলল,লামিয়া কিছুক্ষন চুপ থেকে চিঠিটা চাইল,তন্নী ব্যাগ থেকে বের করল সাদা খামে ভরা একটা চিঠি।কাঁপা হাতে চিঠিটা নিল লামিয়া।দেখে বেশ অবাক হলো তন্নী!জিজ্ঞেস করেই বসল,
– কি ব্যাপার লামিয়া?কার চিঠি?তুমি এতো নার্ভাস কেন?
লামিয়া কিছু না বলে তাকালো তন্নীর দিকে…কিছুক্ষন পর বলল,
– কেন নার্ভাস হচ্ছি জানি না…মনে হচ্ছে এত বছর পরেও আমার ভেতর থেকে ভয় কাটেনি।
এবার চোখ বড় হয়ে গেল তন্নীর,কি বলছে লামিয়া?এই চিঠি কি তাহলে রাকিব পাঠিয়েছে?প্রেরকের নাম তো মনে হয় তাই দেখেছিল।আজ এতো বছর পর…!
তন্নীর ভাবনা দেখে লামিয়া বুঝতে পারল,খুলে বলল চিঠি পাঠানোর ব্যাপারটা।
সব শুনে তন্নী বেশ অবাক হলো ! বললো,
– বুঝতে পারছিনা!আজ এত বছর পর কেন সে তোমাকে চিঠি লিখবে?!খুলে পড়ে দেখতো…
খুলল চিঠিটা লামিয়া,সেই হাতের লেখা…
“লতা,
অনেক চিন্তা করেও্ব স্বম্বোধনের কোন ভাষা খুঁজে পেলাম না।তাই স্বম্বোধন ছাড়াই লিখছি।আসলে আজ এত বছর পর কেন তোমাকে লিখছি জানিনা,কিন্তু কেন জানি লিখছি।জানিনা এই চিঠি তুমি পাবে কি না,তবুও…
আসলে তুমি ঠিকই বলেছিলে,আমার সাথে তোমার জুটি লেখা নেই বোধহয় আর এ জন্যই আমাদের একসাথে থাকা হলো না।কিন্তু আমার কেন জানি মনে হয় লেখা ছিল,আমিই হয়তো তা বেঁধে রাখতে দেইনি।তুমি তো জানতে না,তোমাকে তো পছন্দ করতাম সেই কবে থেকে কিন্তু তুমি কোনদিনই আমাকে তা প্রকাশ করার সুযোগ দাওনি।আর আমিও সাহস করিনি…
কারণ,তুমি আদর্শ বাবার আদরের মেয়ে ছিলে,গৃহ শিক্ষকের সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা তোমার স্বভাবের বাইরে ছিল।তোমার বাবা তোমার চোখে একেঁ দিয়েছিলেন বড় হবার অনেক স্বপ্ন,তুমি সেই স্বপ্নে বিভোর থাকতে। গ্রামের আর দশটা মেয়েদের থেকে আলাদা ছিলে তুমি।মেধাবী,সংসারী সব গুনই ছিল তোমার।আর তাইতো তোমাকে নিয়ে তোমার বাবার স্বপ্ন ছিল অনেক।
কিন্তু সময় তোমাদের সেই স্বপ্নকে বদলে দিয়েছিল নিষ্ঠুরের মতো।হঠাৎ করেই চলে গেলেন তোমার বাবা,তোমার বড় ভাই তোমাদের সব ভাই বোনদের দাযিত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে লাগলেন।এমন সময় তোমাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন তোমার মেঝ চাচা । আসলে কিন্তু তিনি তোমার পাশে এসে দাঁড়াননি,আর তাই এইচএসসি প্রথম বর্ষে থাকতেই তোমার বিয়ের তোড়জোড় শুরু করলেন । একে তো গ্রাম,তার উপর বাবা নেই বিয়ে দেয়া ছাড়া আর কি চিন্তাই করতে পারে তারা…?এতটাই তোড়জোড় তারা শুরু করলেন যে দরকার হলে নগদ টাকা দিয়ে মেয়ে বিয়ে দিতে রাজী এমন অবস্থা!
আর সেই সুযোগটাই নিয়ে ছিলাম কাপুরুষ আমি আর আমার দুলাভাই…!
আমার তখন লেখা পড়া শেষ করে বেকার জীবন । দুই একটা টিউশনী,আর চাকরীর চেষ্টা এই নিয়েই কাটছিল দিন।তারপরেও অনেকটা সাহস করে বড় বোনকে বলেছিলাম,তোমাকে বিয়ে করার কথা । শুনেতো দুলাভাই খেপে মহা আগুন।
একেতো কিছু করিনা আর উপর বিয়ে করতে চাই!কিন্তু আমি যখন বললাম, মেয়ের পরিবার নগদ টাকা দিইয়ে মেয়েকে বিয়ে দিবে আর সেই টাকা দিয়ে আমি বিদেশ যাবো তখন খুব সহজেই রাজী হয়ে গেলেন দুলাভাই।মহা উৎসাহে পনের দিনের মাথায় তিনি আমাদের বিয়ে ঠিক করে ফেললেন।
চারপাশে তখন সবাই খুশী।তোমার ভাই আর চাচা খুশী,যে তারা বাপ-মা মরা মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পেরেছে তাই,আমার পরিবার খুশী যে তাদের ছেলে বিয়ে করে বিদেশ যেয়ে তাদের ভাগ্য বদলে দেবে তাই।এত সব খুশীর মাঝে আমার খুশীটা অনেক ফিকেই ছিল বলা যায়।কারন আমি যে আমার স্বপ্ন কন্যাকে পাওয়ার খুশীতে বিভোর তা তেমন কেউই জানত না।এমনকি তুমি ও না।
বিয়ে হলো আমাদের।কিন্তু হলোনা অনেক কিছুই…কি আশ্চর্য!এই কথাটা আজ ভাবছি আমি?!অথচ তখনতো আমি মহা ব্যাস্ত ছিলাম,আমার প্রবাসে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন নিয়ে।আমার বাড়ীর সবাই তোমাকে আপন করে নিয়েছিল ঠিকই,কিন্তু মন থেকে না।তারা তোমাকে তারা শুধু তাদের ছেলের ভাগ্য উন্নয়নের একটা উসিলা মনে করতো । মা-বাবা হীন একটা মেয়েকে কিভাবে আপন করে নিতে হবে তা চিন্তা করার ইচ্ছা তাদের ছিল না।আমি সবই বুঝতাম।
এও বুঝতাম,যে এই বিয়েতে তোমার কোন মত ছিলনা,বিশেষ করে যৌতুক দিয়ে বিয়ে তুমি কোনভাবেই মন থেকে মানতে পারছিলে না।বারবার শুধু আমাকে বলতে,দেশে থেকে কিছু করার জন্যে।কিন্তু তোমার কথার কো্ন মূল্যই ছিলনা আমাদের কারো কাছে।
অবশেষে বিয়ের আড়াই মাসের মাথায় আমি চলে আসি সিঙ্গাপুর।পেছনে ফেলে রেখে আসি,আমার স্বপ্ন,আমার ভালোবাসা তোমাকে । মাথায় শুধু একটাই চিন্তা যে করেই হোক আমাকে অনেক টাকা রোজগার করতে হবে,পরিবারের চিত্র বদলাতে হবে,তারপর ফিরে যাব তোমার কাছে সারা জীবনের জন্য।কিন্তু আমার এই অনুভূতি গুলো তোমাকে সেভাবে বলা হয়নি কোনদিন।আমি ব্যাস্ত রইলাম জীবন সংগ্রামে আর তুমি ব্যাস্ত রইলে তোমার স্বপ্ন পূরনের সংগ্রামে সম্পূর্ণ একা।
আমার পরিবার কে আপন করার চেষ্টায় তুমি ত্রুটি করতে তা আমি বলতে পারব না, কিন্ত তারপরেও আমার পরিবার তোমার পড়াশুনার একদমই বিপক্ষে ছিল।
প্রচন্ড যুদ্ধ করেই তুমি ইন্টার পরিক্ষা দিয়েছিলে,এবং আল্লাহর মেহেরবানীতে ভালো রেজাল্ট ও করেছিলে।একদিন হঠাৎ করেই আমাকে প্রশ্ন করেছিলে,আপনি দেশে ফিরবেন কবে?।খুব অবাক হয়েছিলাম আমি ! বলেছিলাম,
„চার পাঁচ বছরের আগেতো কোনভাবেই সম্ভব না।‘
‚আসলে তুমি চাইতে আমি দেশে ফিরে আসি,একটা চাকরী নিয়ে সংসার করি,আর তুমিও পড়াশুনা করে নিজের পায়ে দাড়াবে।কিন্তু আমি সেভাবে কখনোই ভাবিনাই।ভাবলে বোধহয় ভালোই হতো…
আমার পরিবার কোনভাবেই তোমাকে আর পড়াশোনা করতে দিবেনা । তোমার পরিবার থেকেও কোন সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা নেই । আর আমি তো থেকেও নেই।
এমন অবস্থায় তুমি একা একাই নিয়ে নিলে জীবনের অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত।
আমাকে ছেড়ে,আমাদের সংসার ছেড়ে,গ্রাম ছেড়ে চিরদিনের জন্য তুমি চলে গেলে।
যাবার আগে রেখে গেলে তোমার সাইন করা ডিভোর্স পেপার।যেদিন সেই ডিভোর্স পেপার টা আমি দেখেছিলাম,আমার চলার গতিটা সেই দিনই থেমে গিয়েছিল।
কি করব আর চলার গতি দিয়ে?…কার জন্য চলব? কি লাভ আর…?
কিন্তু ততোদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে।কোথায় আছো,কার কাছে গেছো কিছুই জানতে পারলাম না । গ্রামে তোমাকে নিয়ে নানা বাজে কাহিনী রচিত হলো,যা শুনতেও ঘেন্না লাগে । তাই আর গ্রামে ফিরলাম না । যেখানে তুমি নেই সেখানে ফিরে কি করব?…মা মারা যাওয়ায় প্রায় সাত বছর পর দেশে ফিরে এলাম।
কয়েক মাস আগে,তোমার ছোট বোনের সাথে দেখা হয়েছিল । ওর কাছেই জেনেছি তোমার বর্তমান জীবনের কথা । পড়াশুনা শেষ করেছো,বিয়ে করে সুখী হয়েছ ।
কিছুটা ঈর্ষা লেগেছিল শুনে,কিন্তু পরে মনে হয়েছে আসলে এমন জীবনই তোমার প্রাপ্য ছিল । আমি হয়তো তোমাকে ভালোবেসেছিলাম ঠিকই কিন্তু না কোনদিন তা তোমাকে বুঝাতে পেরেছি, না পেরেছি তোমার প্রাপ্য তোমাকে দিতে । ঠিকই করেছ তুমি,নিজের জীবন গুছিয়ে নিয়েছ নিজের মতো করে।আমিও চেয়েছিলাম; কিন্তু পারিনি । হয়তো কোনদিন পারবো ও না । যদি পার আমাকে ক্ষমা করে দিও…
তোমার জীবনে আমি শুধু এক দুঃস্বপ্নই,যা মনে করতে তুমি ভয় পাও,কিন্তু আমার জী্বনে তুমি ক্ষনিক বসন্ত যা কে মনে করে আমি সুখ পাই। তুমি আমাকে ভুলে থাকতে চাও আর আমি তোমাকে মনে করেই সারা জীবন থাকতে চাই…কতোটা পার্থক্য আমাদের মধ্যে তাই না?কিন্তু যাই হোক ভুলের শাস্তি হিসেবে আমি সব মেনে নিয়েছি।আর কিছু বলার নেই লতা । লতা,আমি জানি এই নামে তোমাকে এখন আর কেউ ডাকে না,তবু আমি ডাকি।
ভালো থেকো লতা।
রাকিব।“
অনেক রাত এখন । বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়েছে,লামিয়ার স্বামী এখনো ফেরেনি । বাইরে বেশ বাতাস বইছে,বারান্দায় এসে বসে লামিয়া । বৈশাখের এই মধ্য সময়ে অনেক অনেক দিন আগে ফেলে আসা কিছু অনূভুতি মনে ভেসে আসছে এই বাতাসে ।
অনুভূতিগুলো এতদিন অজানা ছিল । কিন্তু আজ জানা হলো,এতো দিন পর !
অগোচরে রাখা ভালোবাসা আজ কেন জানতে পারল লামিয়া?ভেবে পায় না…ও তো জানত রাকিব শুধু মাত্র টাকার জন্যই ওকে বিয়ে করেছিল,ভালোবেসে নয় । আর তাই তাকে ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিতে খুব একটা ভাবতে হয়নি,এমনকি ছেড়ে আসার পরেও তেমন খারাপ লাগা কাজ করেনি । বরং রাকিবের কথা মনে হলেই এক ধরনের রাগ কাজ করত মনে। অনেক স্বার্থপর মনে হতো রাকিবকে। কিন্তু আজ…?একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে লামিয়ার বুক থেকে,আজ কেন যেন মনে হলো বুকের ভেতর জমিয়ে রাখা একটা ক্ষোভ বের হয়ে গেল।
হয়তো অনেক দেরীতে…
ABC

ABC

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.